Monday, October 3, 2011

বিজয়া দশমী

হয়ত আরো বছর কয়েক পর,
ফিকে হয়ে আসা আলোর রাতের ভোরে
বিষাদের সুর বাজছে বরণডালার প্রতীক্ষায় ,
আর মাটির তলায় উদ্ভিদের শিকড় এখনো চেনা জল খুঁজে বেড়ায়...

তবু তোমার হাতের নরম ছোঁয়ায়
শুকনো বুক টালমাটাল,
নম্র সিঁদুরের গুড়ো এলোচুলে বাঁধ ভেঙ্গে
গড়িয়ে পড়ে প্রথম বৃষ্টি প্রেমে বা অপ্রেমে |

তোমার দ্রুত চলে যাওয়ার ব্যগ্রতায়
সে কি শুধুই মাতৃ-পুজোর সাবেক আর্তি?
নাকি গহীন লুকোনো ক্ষতগুলো স্বচ্ছ শরীর ভেদ করে
চুলের মুঠি ধরে নিয়ে যাচ্ছে প্রতিবর্ত (অ)পারগতায়?

নষ্ট তুমি, মূর্খ তুমি, অন্ধ তুমি -
তুমি খারাপ, খারাপ, খারাপ, খারাপ, খারাপ!
ব্যার্থ আমার শাপ-শাপান্তে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে যন্ত্রণা পেয়েছ তুমি,
আমি জানি |

তোমার রক্তের স্বাদ জানব না, আমি?
মাংসাশী, আমি, নধর হিরণ নগ্ন দেহের ভাঁজে ভাঁজে
তোমায় উপভোগ করেছি, সাপটে জড়িয়ে ধরে 
অরক্ষিত যৌনতায় চুমুক দিয়েছি স্পর্ধিত অবলীলায় কতবার...

আসলে সেটাই আমার বেঁচে থাকা |
তোমায় দলে, পিষে, মেরে ফেলতে ফেলতেই
নিষ্ঠুর আমি, ক্লান্ত আমি নিঃশ্বাস নেই অখণ্ড প্রতিদ্বন্দিতায়,
আবার ভেসে উঠে স্বপ্রমাণ করি ক্রমাগত !

আমি জানি তুমি  জান;
আমার প্রত্যেকটা স্বেদবিন্দু তোমার চোখে মেঘ হয়ে ভেসে বেড়ায়,
আমার কাপুরুষতা অতিক্রম করে না তোমার সীমাহীন আদরের আগল,
মাথা থেকে পা পর্যন্ত, আমি নির্লজ্জ উলঙ্গ তোমার চোখে !

তবু...

তবু আমার মাথার চুলে শেষ কবে সাবান ঘষেছিলে তুমি?
দু-চোখের পাতা এক-না-হওয়া অকর্মণ্য উদ্বেগ 
শেষ কবে ভাসিয়ে নিয়ে গেছিলে উজাড় করা স্নেহে, দুই স্তনের তাপে?
শেষ কবে উরুসন্ধির গভীরে মন্থিত হতে চেয়েছিলে স্বেচ্ছায়?

আত্ম-গ্লানি, ব্যর্থতায়, হতাশায়, ওই প্রবাসে, তোমার রক্ত চোষার আগে
তুচ্ছ আমি আরো তুচ্ছ হয়েছি বারেবার...
সে খবর তুমি রেখেও, ধরলে অস্ত্র?
জব্দ, স্তব্ধ করলে গুবরে পোকার সিংহ-নাদ !

আরব্য রজনীর চকমকি পাথর আর পড়ে পাওয়া ষোলো আনার
স্বপ্ন আমি দেখি না |
এই দশমী পুজোর শেষে, আগামী কাল, ওই লাল মাটিতে,
আমি তোমাকে, তোমাকেই চাই...

সেই তোমাকে, পুরনো তোমাকে |

বিমান-যানের স্থবির গতিময়তা আর
ঘামে ভেজা তোমার অন্তর্বাসের সম্মোহক আশ্লেষের দিব্যি !

তুমি ভীষণ ভালো, তুমি পারবে, আমি জানি |


তারিখ নেই  

No comments:

Post a Comment